জানা গেছে, রেজিস্ট্রারির সময় কমিশনের সরকারি ফিস বাবদ ২৫০ টাকা কিন্তু আনোয়ারায় সাব রেজিস্ট্রারি অফিসে আনোয়ারা উপজেলার গ্রামের ভিতরে কমিশন রেজেস্ট্রি হলে ১০ হাজার টাকা, উপজেলার বাহিরের /শহরে হলে ১৫ হাজার টাকা অফিসের পিয়ন মিলটন পালিত জোরপূর্বক নিয়ে থাকে ।
আনোয়ারা সাব রেজিস্ট্রার অফিসকে কেন্দ্র করে একটি লোভী , দূর্নীতিবাজ ও প্রতারক চক্র মিল্টন পালিতের সহায়তায় অসংখ্য ভূয়া দলিল সৃষ্টি করেছে ।গত ২২ আগস্ট ‘২৪ সালে চাতুরী ও বেলচূড়া মৌজার দলিল নং ৩৫৫০, ৩৫৪৬,৩৫৪৭,৩৫৪৯ ৪টি প্রতারণা মূলক দলিল সৃষ্টি করে। দলিলে যার স্বাক্ষর নিয়েছে সেই আনোয়ারা বেগম তখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিসিইউতে ভর্তি ছিল। সেই মামলার অন্যতম আসামীও এই মিল্টন পালিত।
তাছাড়া কমিশনে গেলে এই টাকার বাইরেও মিল্টন পালিত জমির দাতা ও গ্রহীতাকে জিম্মি করে সরকার নির্ধারিত ফি এই বাইরে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করেন।
বিভিন্ন সেবা নিতে আসা মানুষের সাথে দূর্ব্যবহার করা তার নিত্য অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া যে সকল দলিল হয় প্রত্যেক দলিল বাবদ ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে ঘুষ নেয় সে। মিল্টন পালিত আনোয়ারা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যে সমস্ত দলিল হয় প্রত্যেক দলিল হতে প্রতি হাজারে ৩% করে অর্থাৎ এক লক্ষ টাকার দলিল হলে ৩ হাজার টাকা, ১ কোটি টাকার দলিল রেজিস্ট্রি হলে ৩০,০০০ টাকা আদায় করে থাকে।
সব টাকায় মিল্টন পালিত আদায় করে নিজের কাছে রাখেন। পরের দিন ভাগ বাটোয়ারা করে আদায়কৃত টাকার ৫০% সাব রেজিস্ট্রার, বাকি টাকার ২০% কেরানি ও মোহর আর অন্য দুইজনে ২০% বাকি ৫% পিয়ন, টিসি মহড়ার ১% ও নৈশ প্রহরী ১% পেয়ে থাকেন। বাকী ৩% এসএটিএ্যক্ট নামের পদবীধারী ব্যক্তি পেয়ে থাকেন।
তাছাড়া কোন দলিলের খতিয়ান না থাকলে আইডি কার্ড না থাকলে, অনলাইনে খাজনার দাখিলা না থাকলে, বিভিন্ন অজুহাতের মাধ্যমে সাব রেজিস্টার প্রত্যেক দলিল থেকে ৫ হাজার ১০,০০০ টাকা করে আদায় করে মিলটন পালিতের মাধ্যমে। পরে সেই টাকা অফিসের বড় কর্তা থেকে শুরু করে অনেকেই ভাগ পেয়ে থাকে। এভাবে একজন মিল্টন পালিত পুরো আনোয়ারাবাসীকে এক প্রকার জিম্মি করে রেখেছেন।
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার খন্দকার জামিলুর রহমানের কাছে দলিল লেখকরা লিখিত অভিযোগ করলে গত একমাস অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধ রাখে মিল্টন পালিত। কিন্তু আবারও সে টাকা আদায় করা শুরু করেছে বলে জানা যায়।
মিল্টন পালিতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফোন করলে সে সব বিষয় অস্বীকার করে।সে জানায় ইতিপূর্বে জোয়ারগঞ্জ, চন্দনাইশ ও সাতকানিয়ায় চাকুরী করেছে। সব বিষয়ে সাব রেজিস্ট্রারের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেয়। সাব রেজিস্ট্রার সাহেবের সাথে ফোনে কথা বলিয়ে দেবেন অথবা অনুমতি নিয়ে নাম্বার দেবেন বলেও সে আর নাম্বার দেননি ।
এদিকে উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার সার্ভারে এখনো পূর্বের সাব রেজিস্ট্রারের নাম, মোবাইল নাম্বার ও মেইল রয়েছে। বর্তমান সাব রেজিস্ট্রারের নাম, মোবাইল নাম্বার ও মেইল কেন সংযোজন করা হয়নি তা জানা যায়নি।