আকাশপথকে বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ পরিবহন মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হলেও, ইতিহাসে কিছু ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা রয়েছে, যেগুলো কেবল প্রাণহানিই নয়, পুরো বিশ্বকে নাড়া দিয়েছিল। কারিগরি ত্রুটি, মানবিক ভুল কিংবা খারাপ আবহাওয়ার কারণে ঘটেছে এসব মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
এক নজরে দেখে নেয়া যাক বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর ১০টি বিমান দুর্ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ।
টেনেরিফে ভয়ংকর বিপর্যয় :
জাপান ফ্লাইট ১২৩ : ১৯৮৫ সালের ১২ আগস্ট ইতিহাসে এককভাবে একটি বিমান দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি যাত্রী নিহত হয়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে জাপানের বোয়িং সেভেন ফোর সেভেনের একটি বিমান দেশটির মাউন্ট তাকামাঘারার সঙ্গে ধাক্কা লেগে মাটিতে আছড়ে পড়লে মোট ৫২০ জন যাত্রী নিহত হন। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় ৪ জন নারী যাত্রী।
ভারতের চারকি দাদরিতে বিমান দুর্ঘটনা : ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর ঘটে আরো এক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। ভারতের চারকি দাদরি এলাকায় মধ্য আকাশে সৌদি আরবের বোয়িং সেভেন ফোর সেভেনের সঙ্গে কাজাখস্তানের ইলুইশিন টু সেভেনটি সিক্সের সংঘর্ষ হয়। এতে সৌদির ৩১২ জন যাত্রী ও কাজাখস্তানের ৩৭ জন সহ মোট ৩৪৯ জন নিহত হন। ভুল উড্ডয়ন পরিকল্পনা এবং যোগাযোগের অভাবসহ বিভিন্ন কারণের সংমিশ্রণে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এয়ার ফ্রান্স ফ্লাইট ৪৪৭ : ২০০৯ সালে এই এয়ারবাস এ৩৩০ বিমানটি আটলান্টিক মহাসাগরে বিধ্বস্ত হয়, যার ফলে ২২৮ জন আরোহীর সকলেই নিহত হন। এর নেপথ্যে ভুল এয়ারস্পিড রিডিং এবং পাইলটের ত্রুটি সহ বিভিন্ন কারণ ছিল ।
মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট : ২০১৪ সালে এই বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি পূর্ব ইউক্রেনের আকাশে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছিল, এতে ২৯৮ জন আরোহীর সবাই নিহত হয়েছিলেন। গুলি চালানোর কারণ এখনও বিতর্কিত, তবে অনুমান করা হয় যে এটি ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভূপাতিত হয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৮২ : ১৯৮৫ সালে আয়ারল্যান্ডের উপকূলে এই বোয়িং ৭৪৭ বিমানটিতে বোমা হামলা চালানো হয়, যার ফলে ৩২৯ জন আরোহী নিহত হন। গ্লোবালঅর্ডারের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বোমা হামলার জন্য একটি সন্ত্রাসী সংগঠন দায়ী ছিল।
টার্কিশ এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৯৮১ : ১৯৭৪ সালে এই বোয়িং বিমানটি ৭৪৭ প্যারিসের বাইরে বিধ্বস্ত হয়, এতে থাকা ৩৪৬ জন আরোহীর সকলেই নিহত হন। কার্গো ডোরের ব্যর্থতার কারণে বিস্ফোরক ডিকম্প্রেশনের ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আমেরিকান এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৫৮৭ : ২০০১ সালে ম্যাকডোনেল ডগলাস MD-82 বিমানটি উড্ডয়নের পরপরই নিউ ইয়র্কের কুইন্সে বিধ্বস্ত হয়। বিমানে থাকা ২৬০ জন আরোহী এবং মাটিতে পাঁচজন নিহত হন। টার্বুলেন্সের সময় অতিরিক্ত রাডার ইনপুট এবং নিয়ন্ত্রণ হারানোর জেরেই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা । সূত্র : বিজনেস টুডে