আনোয়ারা প্রতিনিধি
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আট মাস পেরিয়ে গেলেও আনোয়ারার এমপিওভুূক্ত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বশিরুজ্জামান স্মৃতি শিক্ষা কেন্দ্রের অফিস সহকারী এখনো পরিবর্তন করা হয়নি। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের নিয়োজিত স্কুলের অফিস সহকারী মোহাম্মদ ওয়াসিম।। এতে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে স্কুলের বিভিন্ন নতুন সংস্কার।
সাধারণত এসব পদে দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া হয়। ওয়াসিম বর্তমানে হাইলধর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগষ্ট (২০২৪) ছাত্র জনতার বিপ্লবে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরও ওয়াসিম শহর ও নগরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ঝটিকা মিছিলে অংশ নিচ্ছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া এই অফিস সহকারীর (ওয়াসিম) নিয়োগ বাতিল করে নতুন করে লোক নিয়োগ দেওয়া দরকার বলে মনে করেন অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্র অভিভাবকরা।
হাইলধর গ্রামের মোহাম্মদ সাহেদ নামের এক ছাত্র অভিভাবক বলেন, ‘আমাদের বশিরুজ্জামান স্মৃতি শিক্ষা কেন্দ্রে অফিস সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল ফ্যাসিবাদের এক দোসরকে। তিনি হাইলধর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ দপ্তর সম্পাদক এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও অর্থ পাচারকারী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের অন্যতম দোসর।’ যত দ্রুত সম্ভব তার নিয়োগ বাতিল করে নতুন করে এই পদে লোক নিয়োগ দেওয়া দরকার বলে মনে করেন এই অভিভাবক।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া স্কুলের অফিস সহকারী মোহাম্মদ ওয়াসিম দায়িত্ব পালন করতেন না ঠিকমতো। তিনি সারাক্ষণ দলীয় কর্মসূচীতে ব্যস্ত থাকতেন। কিন্তু মাস শেষে সরকারের সুযোগ-সুবিধা ঠিকই নিতেন।
সাজ্জাদ হোসেন নামের আরেক ছাত্র অভিভাবক বলেন, ‘বিগত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর এখনো বহাল তবিয়তে আছেন স্বৈরাচারের দোসর মোহাম্মদ ওয়াসিম। তাঁকে দ্রুত সরিয়ে দিয়ে নতুন করে কাউকে নিয়োগ দিতে হবে। নচেৎ স্কুলের সংস্কার পদক্ষেপ ধ্বংস হয়ে যাবে।’
এদিকে পতিত স্বৈরাচারের দোসর মোহাম্মদ ওয়াসিমের শাস্তি চেয়ে কয়েক মাস আগে ইউএনও এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের বরাবরে অভিযোগ দিয়েছিল এক ব্যক্তি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ফেরদৌস অভিযোগ দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও পত্রিকার প্রতিবেদককে অভিযোগের কপি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ফেরদৌস আহমেদ বলেন, প্রায় বছরখানেক আগে ওয়াসিমের বিষয় নিয়ে হাইলধর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন আমাকে হুমকি দিয়েছিল। তিনি বলেন, আবার কখন কি ঘটনা ঘটায় এই আশংকায় আছি। এ বিষয়ে বশিরুজ্জামান স্মৃতি শিক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আয়ুব বলেন, ওয়াসিমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রশাসনিক ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা জুবায়ের আহমেদ মানিক বলেন, পতিত স্বৈরাচারের দোসররা এখনো কিভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহাল থাকে ? তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে।
এসব বিষয় নিয়ে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার বলেন, তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।