চট্টগ্রামে এম এল এম ব্যবসার আড়ালে অসহায় মানুষের আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৬ জুলাই (রবিবার) সকাল ১১ টায় চান্দগাঁও থানার বিপরীতে স্বাধীন ট্রাভেলসের সামনে ভূক্তভোগীরা রিচ বিজনেস সিস্টেম লিঃ ও রিচ প্রপার্টিজ লিঃ এর বিরুদ্ধে এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অভিযুক্ত রিচ বিজনেস সিস্টেম ও রিচ প্রপার্টিজ লিঃ এর ব্যবসার নামে কোটিপতি বনে যাওয়া প্রতারক স্বাধীন ট্রাভেলস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুন অর রশিদ, পরিচালক হোসাইন, পরিচালক মোহাম্মদ হেলাল, পরিচালক লোকমান উদ্দিন, পরিচালক রোমান, পরিচালক রিচার্ড পরিচালক সাইদুজ্জামান তুষার ও পরিচালক জাহাঙ্গীর আলমকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, রিচ বিজনেস সিস্টেম ও রিচ প্রপার্টিজ লিঃ এর মালিকেরা প্রতারণার মাধ্যমে অসহায় মানুষের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তারা এখন টাকা পরিশোধ না করে তালবাহানা করছেন। বক্তারা অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।
এম এল এম কোম্পানির নাম দিয়ে দ্বিগুণ ফেরতের লোভ দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে রিচ বিজনেস সিস্টেম লিঃ ও রিচ প্রপার্টিজ লিঃ এর নামে এম এল এম কোম্পানি।
ব্যবসায় বিনিয়োগ করলে ৫ বছরে টাকা দ্বিগুণ করে দেওয়া হবে। এমন লোভনীয় প্রচারণা চালিয়ে ২০০৮ সাল থেকে ৫ লক্ষ মানুষের নিকট থেকে ১৮০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে চট্টগ্রামের একটি প্রতারক চক্র। ভূক্তভোগীরা তাদের দেয় টাকা ফেরত চাই। ২০২৪ এর আগে প্রতারিত হওয়া লোকজন টাকা চাইতে গেলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ দিয়ে মারধর করাত। ২০২৪ এর পরে যোগাযোগ করলে কোনভাবে পাত্তা না দিয়ে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপেও কোন সুরাহা হয়নি বলে ভূক্তভোগীরা জানান।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ভূক্তভোগী মোঃ আলমগীর, সৈয়দ জাবেদ হোসেন, নজরুল ইসলাম, জাফর আলম কুতুবী, জাহাঙ্গীর আলম, নুরুল ইসলাম, রায়হান আলম, রিয়াজ উদদীন, কামাল হোসেন, আবু শামা, রুবেল হোসেন, সালাউদ্দিন, ইমরান হোসেন ও গোলাম রসুল সহ অনেকে।
ভূক্তভোগীরা আরো জানান তাদের টাকা দিয়ে চক্রের সদস্যরা চড়তেন দামি গাড়িতে, পরতেন দামি পোশাক, চলাফেরা করতেন অভিজাত সব জায়গায়। এভাবে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করে প্রতারণা করে আসছিল চক্রটি। সদস্যকে আইফোন, গাড়ি ও বিদেশ ট্যুরের প্রলোভন দেখানো হতো। এসব প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়ে ভুক্তভোগীরা লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন।
প্রতারক চক্রটি সদস্যদের আকৃষ্ট করার জন্য বিলাসী জীবন যাপন করতেন। যারা বেশি সদস্য এনে দিতে পারত তাদের নিয়ে বড় বড় অনুষ্ঠান করা হতো, যাতে আরও সদস্য আনা যায়। প্রতারণা করে হাতিয়ে নেওয়া টাকার মধ্যে কিছু বিনিয়োগ করেছে, আবার কিছু টাকা বড় বড় অনুষ্ঠান আয়োজনে খরচ করেছে। আর কিছু টাকা ব্যাংকে রেখেছে।